আমার ব্লগ তালিকা

বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০১৫

ইসলামে আমীরের আনুগত্য এবং আমাদের বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়িঃ


আমীরের আনুগত্য করা একদিকে ধর্মীওভাবে যেমন আবশ্যিক পালনীও বিধানের অন্তর্গত ঠিক অপরদিকে তেমনি ব্যাপকার্থে একটি প্রাণী হিসেবে স্বাভাবিক জীবন যাপনের ক্ষেত্রেও রয়েছে এর অত্যাবশ্যকিয় পর্যায়ের প্রভাব।

ইসলামে আমীর বা নেতার আনুগত্য করা শুধু চারিত্রিক সৌন্দর্য বলেই স্বীকৃত নয় বরং ঈমানী তাকাযা ও কর্তব্য হিসেবেও বিধিত।

একারণেই হয়তো হাজার বছরের অভিজ্ঞায় সিক্ত প্রবাদের ঝুলিতে স্থান পেয়েছে একটি ছোট্ট অথচ প্রভাবশালী বাক্য।
"যার মুরুব্বী নেই তার মুরুব্বী শয়তান"

ইমাম, আমীর, খলিফা, নেতা, পীর আর এজাতীয় যে শব্দই চয়ণ করুন না কেন আমীর না মেনে সুন্দর ও স্বাভাবিক নৈতিক জীবনের আশা করা একেবারেই বোকামী।

আর হ্যাঁ, আমীর মানা আর না মানা নিয়ে আমাদের দু'ধরণের দুঃখের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
এক. আমীরের আনুগত্যে বাড়াবাড়ি।
দুই. আমীরের আনুগত্যে ছাড়াছাড়ি।

ধরণঃ
প্রথম পর্যায়ে আমীরের আনুগত্বে বাড়াবাড়িটা ইদানিং বেশ প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা বর্তমানে ঈমান বিধ্বংসী ভাইরাস রুপে কাজ করছে। আর এ ভাইরাসে এমুসলিম জাতীর তিনশ্রেণীর মানুষ আপেক্ষিকহারে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

¤ এদের প্রথম শ্রেণী হলো, জাগতিক কোন  রাজনৈতিক দলের কর্মী বা সমর্থকবৃন্দ। এরা নেতার আনুগত্য করে  নিজস্ব কিংবা দলীয় স্বার্থ আদায়ের লক্ষে । তাতে হাজারটা বিচ্ছৃংখলাও তাদের নিকট কোন ব্যাপার না। এরা স্বার্থলোভী। পাপী। শিক্ষিত কিংবা মূর্খ শয়তান। ক্ষেত্রবিশেষ বেঈমানও।
¤ এদের দ্বিতীয় শ্রেণী হলো, ধার্মিক কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী বা সমর্থকবৃন্দ। এরা নেতার আনুগত্য করে  ইসলামী শাসন বা খেলাফা প্রতিষ্ঠার স্বার্থে। কিন্তু এদের মাঝে রয়েছে এমন কিছু কর্মী যারা নিজের দলকেই একমাত্র সঠিক দল মনে করে এবং নিজের নেতাকেই একমাত্র হক ও হক্কানিয়াতের মাইলফলক ভেবে থাকে। ক্ষেত্রবিশেষ এরা নিজের নেতাকে নবীর আসনে বরং খোদাও মনে করে থাকে। এরা মুনাফিক। দলান্ধ। গোড়া। একরোখা, ধর্মব্যবসায়ী। নেতাপুঁজারী এবং ক্ষেত্রবিশেষ এরা কাফেরও।
¤ এদের তৃতীয় শ্রেণী হলো, শুধু ধর্মীয় বিধান নির্বাচন ও ধর্মপালণে নিজের ন্যুনতম প্রেচেষ্টা ব্যয় না করে কোন অভিজ্ঞ বা অজ্ঞ নেতার অন্ধ অনুকরণে বিশ্বাসী অনুসারীগণ। এদের মাঝে একশ্রেণীর বাড়াবাড়ি এতই চরম পর্যায়ের যে কখনো কখনো এদের নেতারা এদের আগুনে ফেলে দিলেও এদের সুবুদ্ধির উদয় হয়না। হ্যাঁ, এদের নেতা যদি প্রকৃতই হক হয় তবেতো তারা এ বাড়াবাড়ি করেও পাড় পেয়ে যাবে। আর যদি নাহক হয় তবে তাদের কি গতিক হবে। এজন্যই এদেরকে ক্ষেত্রবিশেষ পথভ্রষ্ট এবং ক্ষেত্রবিশেষ সুবুদ্ধিমান অন্ধও বলা যায়।

সর্বশেষ দ্বিতীয় পর্যায়ে আমীরের আনুগত্য ছাড়াছাড়ির কবলে বিভ্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য কোন উপযুক্ত বিশেষণ আমি খুঁজে পাইনি। আমিতো আমীর না মেনে চলার কোন পথই দেখিনা। হোক সে মহাজ্ঞানী বা অতি পন্ডিত্‍। এদের ব্যাপারে আপনারাই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন